-এই যে ছেলে এই ক্লাস বাদ দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছো কেন?(মেম)
---- মেম একটা কোকিল পাখি দেখতে ছিলাম অনেক সুন্দর। (রাসেদ)
---- আমার ক্লাস কি পাখি দেখার জন্য? যাও বের হয়ে যাও ক্লাস থেকে.(মেম)।
এই যে দেখছেন মেডাম বকা দিল ছেলেটাকে এই ছেলেটা রাসেদ।
নয়া নয়া প্রেম পরছে তো তাই আবল-তাবল কথা আসে।
সে মায়াকে দেখে বলল অনেক সুন্দর পাখি।
রাসেদ নবম শ্রেণী পড়ে আর মায়া সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে। মায়াকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে কিন্তু ভালোবাসা টা একতরফা।
মেয়েটা দেখতে যেমন খুব সুন্দর ছিল, মেয়েটা পড়াশুনো খুব ভালো ছিল।
রাসেদ একদিন সাইকেল চালিয়ে মেয়েটার পিছন পিছন যেতে লাগলো হঠাৎ দেখতে পেলো মেয়েটা একটা লাঠি কুড়িয়ে নিলো রাসেদ দেখা মাত্র সাইকেল ফালাইয়া দৌড়।
তারপরের দিন স্কুল গেল রাসেদ।
মায়া কে দেখে লুকিয়ে পরলো।
-------এই যে ভাইয়া এইদিক আসেন। (মায়া)
----- জি আমাকে ডাকছেন??(রাসেদ)
----- জি আপনাকে ডাকছি একটু এইদিক আসেন একটা কথা বলার ছিল।
রাসেদ ভয়ে ভয়ে কাছে গেল। সেইখানে একটা মেয়ের দল তাই একটু ভয় লাগতাছে রাসেদের।
রাসেদ তাদের কাছ থেকে দুই বছর সিনিয়র হলে লাভ নাই রাসেদ কে কেউ দেখলে মনে করবে ছোট একটা বাবু।
ভয়ে ভয়ে সামনে গিয়ে,,,,,,
------ জি কি বলবেন বলেন(রাসেদ)
----- এইখানে একটা চিঠি আছে ওই যে ছেলেটা কে দেখছেন ওই ছেলেটার হাতে দিবেন। তাহলে বুজে যাবে কে দিয়েছে। (মায়া)
এই কথাটা শুনা মাত্র রাসেদ অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ জন্য মনে হলো রাসেদ কেঁদে দিবে কিন্তু পারলো না।
---- জি আমি এইটা দিয়ে দিবো এখনই ওই ছেলেকে।(রাসেদ)
--- আর বলবেন যে এইখান যা লিখা আছে তা উত্তর দিতে ফারজানা বলছে।(মায়া)
--- এইটা কে দিয়েছ ওই ভাইয়াকে?(রাসেদ)
---- এই যে দেখছেন এই ফারজানা দিয়েছ তাদের একে ওপরকে খুব ভালোবাসে।
আর আপনি এত জেনে কি করবেন? (মায়া)
---- না মানে আমি মনে করছি আপনি দিয়েছন। (রাসেদ).
---- আমি একজনকে খুব পছন্দ করি সে খুব ভালো একজন ছেলে। আপনি তারতারি যান চিঠি টা দিয়ে আসেন।(মায়া)
রাসেদ তাৎক্ষণিক একটা মুচকি হাসি দিয়ে চিঠি টা দিয়ে আসলো।
রাসেদ হাসি দেওয়ার কারন হচ্ছে সে মনে করছে তাকে পছন্দ করে।
বাড়িতে গিয়ে রাসেদ গোসল করে শুয়ে পরলো।
বিকেলবেলা সাইকেল নিয়ে বের হয়ে গেল দুই বন্ধু।
রাসেদ একমাত্র বন্ধু আল-আমিন যাকে সে তার বাবা-মায়ের সমান ভালোবাসে।
আল-আমিন:- কোথায় যাবি এখন?
রাসেদ:-আরে বেশি দূরে যাবো না আগে যাই তারপর বলছি।
রাসেদ নিজের গ্রাম পার করে অন্য গ্রাম আসলো।
তখনো আল-আমিন কে কিছু জানায় নি।
একটা বাড়ি সামনে সাইকেলটা থামিয়ে এইদিক ওইদিক ঘুরতে লাগলো।
আল-আমিন:- কার বাড়ি আর তুই এইখানে আমাকে নিয়ে আসছিস ঘরে নিবি না? তোর কোন আত্মীয় বাড়ী বুঝি।
রাসেদ:- মাথা নষ্ট এইটা মায়াদের বাড়ি আর তুই বলছিস ঘরে নিয়ে যেতে।
আল-আমিন:- এই কোন মায়া রে তুই কি কখনো এই নামে আমাকে কিছু বলছিস?
রাসেদ এখন ফেঁসেছে কারন আল-আমিন সাথে এখনো এই ব্যাপারে আলোচনা করে নাই।
রাসেদ:- আরে করেছি করেছি চল এখন বাসায় ফিরা যাক।(কথা কাটানো ফন্দী)
কিছুটা দূরে যাওয়ার পর ------
------ এই দাড়া বলছি দাঁড়াইতে বলছি কিন্তুু (আল-আমিন)
----- কিসের জন্য বল।(রাসেদ)
----- সত্যি করে বল এই মেয়ের ব্যাপারে আমাকে কিছু বলেছিস কখনো?(আল-আমিন)
----নারে দোস্ত কখনো বলি নাই হয়েছে কি আমি না মায়াকে খুব বেশি ভালোবাসি কিন্তুু ভয়ে বলতে পারি না।(রাসেদ)
---- দাড়া শালা এইদিক দিয়ে প্রেম পরে গেছিস আর আমি জানি না। (আল-আমিন)
---- সরি দোস্ত আর এমনটা হবে না,,,, আমি ভয়ে বলি নাই যদি তুই বলিস যে প্রেম না করতে তাই।(রাসেদ)
----- প্রেম করবি আর আমি না করবো ভাবলি কি করে। আমি তোর প্রেম জন্য সব কিছু করবো।
এখন টার্গেট একটা আমরা ওই মেয়েকে প্রতিদিন ফলো করবো।
একদিন সুযোগ পেলে বলে দিবি।(আল-আমিন)
---- আরে দোস্ত ওই মেয়েটা আমাকে মনে হয় পছন্দ করে আজকে ওর কথা শুনে বুজেছি। (রাসেদ)
---- তাহলো তো হয়েছে,,, দেখতে হবে না এইটা কার বন্ধু। পছন্দ না করে যাবে কোথায়।( আল-আমিন)
---- কালকে দেখি মেয়েটাকে গিয়ে বলবো তুই আমার সাথে থাকবি কেমন?( রাসেদ).
---- এখন আমাদের টার্গেট এইটা তুই একদম চিন্তা করিস না। গিয়ে এখন পড়তে বসবো তারপর কালকে একটা না একটা ব্যবস্থা হবে।( আল-আমিন).
তারপর দুই বন্ধু মিলে বাসায় রওনা হলো,
পথের মাঝে দারুন দারুণ গল্প করতে করতে বাসায় চললো।
বাসায় গিয়ে দেখে মা ঝাড়ু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রাসেদ আর আল-আমিন ভয়ে বাসায় ঢুকে না অপেক্ষা করতাছে গেটের বাহিরে।
একমাত্র এই বাসায় ঢুকতে পারবে রাসেদ তার বাবা আসলে না হলে আজকে রাসেদ কপালে অনেক খারাপ কিছু আছে।
এই বাড়িতে দুই বাঘ থাকে সরি বাঘ আর বাঘিনী। বাঘ হলো রাসেদের বাবা আর বাঘিনী তো দেখছেন দাঁড়িয়ে আছে ঝাড়ু নিয়ে। রাসেদ তার মাকে খুব ভয় পাই তাই রাসেদ তার মাকে বাঘিনী বলে।
রাসেদ বাবা রাসেদ কে খুব ভালোবাসে রাসেদ বাবা ব্যাংক চাকরী করে। তাদের পরিবার টা খুব সুখের.....
এইতো রাসেদের বাবা এসে গেছে ---
রাসেদের বাবা:- এই কি আমার ছেলে এইখানে দাঁড়িয়ে আমার এই দুই ছেলে কে রাস্তায় দাঁড়িয়ে করে রেখেছে কে? কার এত বড় সাহস?
রাসেদ:- বাবা আর কে হবে তুমি তো যানো। আমাদের প্রিয় মা। মানে আপনার স্ত্রী।
বাবা:- তোরা চল আমার সাথে আজকে বড় ধরনের ঝগড়া হবে। আমার ছেলেদের বাহিরে দাঁড়িয়ে করে রাখা এত বড় সাহস...
মা:- তুমি তাদেরকে এত ভালোবেসে মাথার উপরে চড়াও।
রাসেদের বাবা চোখ টিপ দিয়ে রাসেদ আর আল-আমিন কে ঘরে যেতে বললো।
তারা ঘরে গিয়ে দুজন পড়তে বসে পরলো।
আল-আমিন ছেলেটার একটা পরিবার ছিল কিন্তুু কপাল খারাপ হলে যা হয় তাই হয়েছে আল-আমিন সাথে। তার পরিবার সবাই মারা যায় একটা accident।
আল-আমিন বাবা ছিল রাসেদ বাবা ভালো বন্ধু। আল-আমিন কে কখনো তারা বাবা মার আদর থেকে কম দেয় নি।
অনেক বেশি ভালোবাসে তাদের দুজনকে রাসেদ বাবা।
দুজন পড়া শেষ করে শুয়ে পড়লো।
গভীর রাত হয়ে গেল,,,,,,,,
---- এই রাসেদ তুমি কি আমাকে ভালোবাসো? (মায়া)
---- অনেক বেশি ভালোবাসি কিন্তুু সাহস পাই না বলার তাই বলি না তোমাকে।(রাসেদ)।
--- তবে রে দাড়া তোর হাত পা ভেন্গে ঘরে বসিয়ে রাখবো ভালোবাসা তখন ঘরে বসে বেশি করে ভালোবাসিস।(মায়া )
---- এই তুমি রেগে যাচ্ছ কেন? আমি তোমাকে ভালোবাসি এতে অপরাধ কোথায়?(রাসেদ)
----- কোন অপরাধ নাই কিন্তুু তোর একটা অপরাধ যে তুই এতদিন হয়ে গেল আমাকে বললি না কেন? তাই আমি তোকে ভালোবাসবো না।
তুই অন্য মেয়ে কে গিয়ে ভালোবাস যা,,,,আমি গেলাম।(মায়া)
----- যেও না যেও না মায়া আমি খুব ভালোবাসি তোমায়।
আল-আমিন:- কিরে কি হয়েছে এত রাতে স্বপ্ন দেখে কি আবল-তাবল বলা শুরু করলি?
রাসেদ:- মায়া আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে,,, আমি কেন আগে বলি নাই যে তাকে ভালোবাসি।
আল-আমিন:- তোরে তো দেখছি ইতোমধ্যে পাগল করে ফেলছে কালকে আমরা সব বলবো কেমন এইবার ঘুমা।
রাসেদ:- হুম শুয়ে পর আমি ঘুমাবো।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে দুজন নামাজ পড়ে হাঠতে বের হয়ে গেল।
দুজন কিছু বলছে না হাঠছে আর হাঠছে এক পযার্য় দুজন কথা বলতে যাবে ঠিক তখনই দেখতে পেলো মায়া প্রাইভেট পড়তে স্যার বাসায় যাচ্ছে।
আল-আমিন:- এই সুযোগ বলে দে এই সুযোগ হাত ছাড়া করিস না। কেউ নাই বলে দে।
রাসেদ:- না দোস্ত আমার ভয় লাগতাছে আমি পারবো না। যদি থাপ্পড় মারে তাহলে।
আল-আমিন:-আমি গিয়ে বলে আসি তুই দাড়িয়ে দেখ।
যেই আল-আমিন পা বাড়াতে যাবে এর আগে কোথায় হতে যানি একটা ছেলে ফুরৎ করে পাখির মত এসে propose করে বসলো।
রাসেদ আর আল-আমিন চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো এই কি হয়ে গেল।
সত্যি সত্যি মায়া ওই ছেলেকে ভালোবাসে।
ভাবনার আগে একটা কষিয়ে বসিয়ে দিলো গালে ওই ছেলেকে।
রাসেদ আর আল-আমিন দেখে অবাক ওই ছেলেকে থাপ্পড় দিয়েছ ঠিকই কিন্তু
রাসেদ আর আল-আমিন নিজ গালে হাত দিয়ে বসে রইছে আর একটু আগে হলে আল-আমিন এই থাপ্পড় খায়।
আল-আমিন:- এখন কি করবি? যে মেয়ে আল্লাহ যানে কি করে!
রাসেদ:- আমি এই মেয়েকে ভালোবাসি আর এই মেয়েকে ভালোবেসে যাবো।
তুই ভয় পাইলে হবে আমি আছি না চিন্তা করিস না।
আল-আমিন:- সেইটা ভয় তুই আছোস বলে ভয়। কারন তুই এই মেয়েকে ভালোবাসি ঠিকই কিন্তুু এই মেয়ে তো আর তোকে ভালোবাসে না। পরে দুজন মার খেতে হবে।
রাসেদ:-আরে বাদ দে একটা নতুন আইডিয়া আসছে মাথায় যদি মায়ার চোখে চোখে থাকি তাহলে হয়তো মায়া আমাকে ভালোবাসতে পারে।
আল-আমিন:- এইটা কিভাবে সম্ভব?
রাসেদ:- সব সম্ভব,,,, অসম্ভব কে সম্ভাব করাই রাসেদ কাজ।
আল-আমিন:- চাপা কিছু কমাইয়া ছাড় পরে বুঝা যাবে। আগে বল কি আইডিয়া?
রাসেদ:- আমরা দুজন নাজমুল স্যার কাছে পড়বো আমরা স্যার নতুন ছাত্র।
তখন আমাকে কেউ বাধা দিতে পারবে না।
আল-আমিন:- তখনই বাধা বেশি যদি নাজমুল স্যার ওই মেয়েদের যখন পড়াই তখন যদি আমাদের না পড়াই কি হবে বাচা ধন?
রাসেদ:- কথা টা মন্দ বলিস নাই কিন্তু একটা জিনিস কি আমরা নেগেটিভ না ভেবে পজিটিভ ভেবে স্যার কাছে যাবো দেখা যাক তারপর কি হয়।
আল-আমিন:- চল এখন যাওয়া যাক স্যার সাথে কথা বলে তারপর বাড়ি যাবো।
দুজন আনমনে চলতে লাগলো স্যার বাসায় গিয়ে দেখে স্যার সবাইকে প্রচুর মারতেছে হাতের লেখার জন্য।
তারা একে ওপরের দিক তাকিয়ে হাসতে লাগলো।
আল-আমিন:- দোস্ত এইখানে প্রাইভেট পড়া যাবে না। চল কেটে পরি এই মেয়ের চিন্তা করিস না আর।
রাসেদ:- দোস্ত কি বলিস এইগুলো,,,, আমি যা বলছি তা করবো।
আল-আমিন:- কি আর করা যায় কপালে যা লিখা আছে তাই হবে চল।
ভয়ে ভয়ে স্যার রুমে গেল। যাওয়ার সাথে সাথে স্যার খুশি হয়ে গেল তাদেরকে দেখে।
কারন স্যার তাদেরকে অনেক ভালো যানে মানে এক কথায় বলতে গেল তারা ক্লাস ভালো ছাত্র।
রাসেদ যেমন ভালো তেমনে চুপচাপ আর আল-আমিন তো সবসময় রাসেদ খাতা দেখে রোল:- ৩ থাকে আর রাসেদ সবসময় ১ থাকে।
স্যার:- তোমরা হঠাৎ আমার বাসায়? কোন সমস্যা হয়েছে?
আল-আমিন:- স্যার হয়েছে কি আমরা দুজন আপনার কাছে পড়তে চাই। বাবা- মা কে বলেছি এখন আপনি যদি এমন সময় আমাদের পড়াইতেন।
স্যার:- এমন সময় তো তাদেরকে পড়াই তোমরা বিকেল পড়তে হবে।
এইকথা শুনা মাত্র রাসেদ দাঁড়িয়ে গেল।
রাসেদ মাথা নষ্ট হয়ে গেছে কি চিন্তা করে আসছে আর কি হলো।
আল-আমিন:- আমরা বিকেলবেলা অন্য প্রাইভেট পড়ি স্যার এখন আপনি যেইভাবে আমাদের এমন সময় পড়াতে হবে।
আপনার মতো স্যার আর কেউ গণিত বুঝাইতে পাড়ে না। স্যার আপনি তো সবার চাইতে অনেক ভালো গণিত বুঝাইতে পারেন প্লিজ স্যার।
স্যার:- ঠিক আছে তোমরা কালকে তাদের সাথে এমন সময় পড়তে চলে এসো।
তারা দুজন মহাখুশি এই কথা শুনে। স্যার কে পাম দিয়ে ফুলাইয়ে ফেলছে।
স্যার আর না করতে পারলো না।
0 comments:
Post a Comment